১০টি ধাপে অনলাইন শপ চালু করা যায়, তার আগে আপনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে ই-কমার্সে বিনিয়োগ করবেন বা প্রতিষ্ঠিত করবেন। আপনি কোনোভাবে একটা দারুন আইডিয়া পেয়ে গিয়েছেন অথবা কেও কোনো আইডিয়া নিয়ে সফল হয়ে সেটা জানেন বা দেখেছেন। আমরা এর আগে একটা লেখায় বলেছিলাম যে আইডিয়া পাবার দুটো উপায় আছে, তার একটি নিজে বের করা আর অন্য কাউকে করতে দেখা। এখন আপনি শুরু করবেন।
আমরা এর আগে অনলাইন শপ চালু করার কাজগুলোকে অফলাইনের কাজ ও অনলাইনের কাজ দুই ভাগে ভাগ করে পোস্ট করেছিলাম, সেখানে সংক্ষেপে লেখা ছিল। এখানে আপনি যেন সহজভাবে অনলাইন শপ তথা ই-কমার্স শুরু করতে পারেন এজন্য করণীয়গুলো এক যায়গায় ধাপে ধাপে বর্ণনা করব। যেন আপনি একেবারে শূন্য থেকে শুরু করে ব্যবসায়কে ক্রেতার কাছে পৌঁছাতে পারেন।
যে ১০টি ধাপে অনলাইন শপ চালু করবেন:
১. কী বিক্রি করবেন তা (পণ্য) ঠিক করুন
এটা হল ই-কমার্সের সাদা খাতায় প্রথম দাগ। কোন পণ্য বিক্রি করবেন তা ভেবে সতর্কতার সাথে ঠিক করতে হবে।
যাদের কাছে বিক্রি করতে চান সেই ক্রেতারা কী পছন্দ করবে সেটা ভাবার আগে আপনাকে কিছু প্রতিযোগিতামূলক বিষয় চিন্তা করতে হবে এবং নিজেকে সে নিয়ে প্রশ্ন করতে হবে। কি সেই প্রশ্নগুলি:
- কোন ব্র্যান্ডগুলি ইতিমধ্যেই অনলাইনে জনপ্রিয়?
- মানুষের কোন কোন সমস্যা আপনি সমাধান করতে সাহায্য করতে পারবেন?
- কিভাবে পণ্য সংগ্রহ করবেন?
ব্যবসায়ের আইডিয়াকে কে এগিয়ে নেয়ার জন্য, যা করতে হবে:
- পণ্য গবেষণা করুন: আপনি পছন্দ করেন এমন কোনো পণ্য বা ভাল বোঝেন এমন পণ্য বাছাই করুন এবং সেটি নিয়ে ভাল কিছু করার চেষ্টা করুন। যেমন বড় চেইন শপগুলোতে দেখা যায়, অনেক পণ্য থাকে, কিছুদিন পর সেই চেইন শপ নিজে কিছু পণ্য বের করে, বাংলাদেশে স্বপ্নের স্টোরে গেলে এমন দেখবেন। একসময় স্বপ্ন শুধু অন্যের পণ্য বিক্রি করত, এখন স্বপ্নের নিজের নামে গ্রসারি পণ্য আছে। কারণ স্বপ্ন ক্রেতারা কোন পণ্য বেশি কিনে। দেশের বা এলাকার অনলাইন শপগুলোর ওয়েবসাইট ঘাটুন, সেখানে দেখুন সবচে বেশি বিক্রিত (বেস্ট সেলার) পণ্য কোনগুলো। বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ ঘেটেও পণ্য ও তার বাজার সমন্ধে জানতে পারবেন। বেস্ট সেলার পণ্য কোনগুলো যেমন জানতে পারবেন তেমনি কোন পণ্য প্রয়োজন কিন্তু যথেষ্ট পরিমাণ পাওয়া যায় না সেটিও জানতে পারবেন।
- নতুন বাজার খুঁজুন: কখনও এমন হয়েছে অনলাইনে কোনো পণ্য খুঁজছেন কিন্তু মনের মত কিছুই পাচ্ছেন না? খুঁজে না পেয়ে এখান থেকে ব্যবসায়ের আইডিয়া পেতে পারেন। যেমন আমার গ্রামের এলাকায় ডকুমেন্ট নোটারি করার ব্যবস্থা নেই, আমার মাথায় ঢুকে গেল আমিই একজন আইনজীবীর সাথে চুক্তি করে নোটারি সেবা দেয়া শুরু করতে পারি।
- প্রচলিত ধারায় চলুন: প্রয়োজন থেকে বুদ্ধির পেলেন বা বর্তমানে ভাইরাল কোনো পণ্য থাকুক না কেন, এর বাইরে সমাজে কীসের ট্রেন্ড সেখান থেকেও অনেক পণ্য পেয়ে যেতে পারেন। এখানে মূল বিষয় হল ওই পণ্যটার সাফল্যের পেছনের কারণ বুঝতে পারা। এই ট্রেন্ডটা যে এখন খুব চলছে তা তা কতদিন স্থায়ী হবে? বাজারের এই গতি বজায় রাখার জন্য আপনাকে কীভাবে মার্কেটিং করতে হবে? কিন্তু যে পণ্যের ট্রেন্ড খুব ক্ষণস্থায়ী এমন পণ্য বাছাই থেকে বিরত থাকুন।
আপনি মাথা খাটিয়ে ভাল বুদ্ধি বের করে সাথে সাথে নেমে যাবেন না, কিছু সময় নিন। কারণ বুঝতে হবে যে সেই পণ্য বা সার্ভিস মানুষ কতটা খাবে, আদৌ খাবে কিনা। আবারও নিজেকে কিছু প্রশ্ন করতে হবে:
- আপনার পণ্য কি সহজে ডেলিভারি করা যায়? এমন পণ্য নিয়ে ই-কমার্সে আসা উচিৎ যা ভঙ্গুর নয়, হালকা ওজনের, হালকা হলেও বিশাল আকারের নয়, যার টুকরো টুকরো অনেক পার্টস থাকে না। প্যাকেট করতে সহজ, কুরিয়ার কোম্পানির দেয়া প্যাকে বা বক্সে এটে যায়, দ্রুত পচে যায় না এমন পণ্য বাছাই করা উচিৎ।
- আপনি কোন মাধ্যমে বিক্রি করার পরিকল্পনা করছেন? এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অনলাইনের অনেকগুলো ভাগ বা ধরণ আছে। যেমন, ফেসবুক, ইউটিউব, দাড়াজ-ওয়ালকার্টের মত মার্কেটপ্লেস বা নিজের একটা ওয়েবসাইট। এই সব মিডিয়ার কিছু না কিছু সুবিধা কিছু অসুবিধা আছে।
- আপনি কি লাভ করতে পারবেন? আপনি কত টাকায় আপনার পণ্য বিক্রি করতে পারেন? আপনার ব্যবসায়িক খরচ কত হবে? খরচ ও বিক্রয়মূল্যের দিক থেকে আপনার প্রতিযোগীদের চে আপনি কতটা এগিয়ে থাকতে পারবেন? বিনিয়োগের বিপরীতে কেমন টাকা আসবে সেটা হিসেবে করতে হবে। যদি বিশাল বিনিয়োগ করে সামান্য কিছু আসে, এমন হলে আপনি উৎসাহ ধরে রাখতে পারেন না।
- ঠিক কীভাবে পণ্য তৈরি করবেন? এমন উৎপাদক খুঁজে বের করতে হবে যিনি সময়মত, সাশ্রয়ীমূল্যে আপনাকে পণ্য সরবরাহ করতে পারবে এবং সেটা সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে তৈরি করতে পারবে। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে আপনার পণ্যটি যত জটিল হবে, এর উপকরণে, পরিবহনে এবং গবেষণায় তত বেশি ব্যয় করতে হবে।
- কোন বিধিনিষেধ বা সীমাবদ্ধতা আছে কিনা? কিছু পণ্য যেমন খাদ্য এবং পানীয়ের জন্য বিশেষ লাইসেন্স এবং অনুমতির প্রয়োজন হয়। আবার কিছু পণ্যের বিজ্ঞাপন দেয়া নিষিদ্ধ। এসব জেনে নিতে হবে।
২. কার কাছে বিক্রি করতে চান সেটি (ক্রেতা) ঠিক করুন
কী বিক্রি করবেন তার সাথে সাথে ঠিক করতে হয় সেটি কার কাছে বিক্রি করবেন। আপনার পণ্যকে আপনি যত ভাল বুঝবেন, আপনার ক্রেতার যত কাছে থাকতে পারবেন ব্যবসায়ে সফল হবার সম্ভাবনা তত বেশি হবে। এই কথাটার আসলে বিশদ ব্যাক্ষা দরকার।
যদি এর মধ্যে কোনো পণ্য ঠিক করে থাকেন, তাহলে সেই পণ্যের আদর্শ ক্রেতা কারা নির্ধারণ করে ফেলুন। যে টাইপের ক্রেতাদের আপনি ভাল বুঝেন তাদের উপযোগী পণ্য তৈরি করুন।
ই-কমার্স ফুলশয্যা নয় বা রোদেলা দিনে ফুলের উপর প্রজাপতির উড়াউড়ির মত রুপকথা নয়, তাই এতে এতে আগ্রহ ধরে রাখার উপায় খুঁজতে হবে। অনেকগুলো যৌক্তিক এবং আর্থিক প্রশ্নের সমাধান আপনাকে করতে হবে।
আপনি কেন আপনার ব্যবসা করছেন, কার জন্য করছেন, নিজেকে এই কথা মনে করিয়ে দেবেন বার বার যেন আপনি দৌড়ে ভালভাবে টিকে থাকতে পারেন। সেই লক্ষ্যে, আপনার ব্যসায়ের ব্যক্তিত্ব প্রতিষ্ঠা করুন, প্রতিষ্ঠিত হতে সময় দিন। তাহলে ক্রেতার মনে টিকে থাকবেন। ক্রেতার সাথে যোগাযোগ, বিজ্ঞাপন, ওয়েবসাইট তৈরি, মার্কেটিং পরিকল্পনা ও আরও অনেক বিষয়ে পরিকল্পনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
৩. মালিকানার ধরণ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন করুন
পণ্য, ও টার্গেটেড ক্রেতা ঠিক করে আপনি এখন শুরু ব্যবসায় শুরু করতে প্রস্তুত। এখন আপনাকে একটা আইনগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আপনি কি হিসেবে ব্যবসায় রেজিস্ট্রেশন করবেন? এক মালিকানা, অংশিদারী নাকি আরও বড় কিছু। এটি এমন সিদ্ধান্ত যা ব্যবসার তহবিল, করের বাধ্যবাধকতা, ব্যক্তিগত সুরক্ষা এবং আরও অনেক কিছু প্রভাবিত করবে।
আপনি একা করলে এক মালিকানা, যদি এক বা একাধিক আত্মীয় বা বন্ধু বা অন্য যে কারো সাথে ছোট আকারে করতে চান তবে অংশীদারি, আর বড় পরিসরে করতে চাইলে লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে নিবন্ধন করতে হবে।
একক মালিকানা – এর মানে আপনি একা আপনার ব্যবসায়ের মালিক, ব্যবস্থাপক, পরিচালক, কখনও কখনও ঝাড়ুদারও। এটি ব্যবসা শুরু করার সহজতম রুপ। এর মানে, আপনি একজন নিয়োগকর্তা হিসাবে কাজ করবেন না বরং, আপনি একজন ব্যক্তি হিসাবে ব্যবসা পরিচালনা করবেন।
অংশীদারিত্ব – আপনি যদি দুই বা তার বেশি কাউকে অংশীদার হিসেবে সাথে আপনার ব্যবসায় যুক্ত করেন, তাহলে আপনাকে একটি অংশীদার চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে হবে, যা নির্ধারণ করে যে আপনি কীভাবে দায়িত্ব এবং লাভ-ক্ষতি ভাগ করবেন। এই চুক্তি প্রতিটি অংশীদারের ভূমিকা, দায়িত্ব, বিনিয়োগ এবং অধিকার সবকিছু লিপিবদ্ধ থাকবে৷ এর কিছু সুবিধা ও কিছু অসুবিধা আছে। সাধারণত যদি পুঁজির ঘাটতি থাকে, বা ভাল বিশ্বস্ত অংশীদার পান যিনি দক্ষতা দিয়ে এগিয়ে নিতে পারবেন তবে অংশিদারী ভাল অপশন।
সীমিত দায় কোম্পানি (LLC) – এই বিকল্পটি আপনাকে আপনার ব্যক্তিগত এবং ব্যবসায়িক সম্পদ আলাদা রাখতে দেয়, ব্যবসা শুরু করার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়, কারণ এতে ব্যক্তির কোনো দায় থাকে না। বড় পুঁজির বড় পরিসরে ব্যবসায়ের জন্য এটা ভাল অপশন। প্রাইভেট লিমিটেড বা পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে এটি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। এটা ব্যক্তিউদ্যোক্তাদের জন্য উপযুক্ত নয়।
আমার ব্যক্তিগত পরামর্শ হল এক মালিকানা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রথমেই রেজিস্ট্রেশনে না গিয়ে কিছুদিন অনলাইনে চলার পরামর্শ, তবে এটি শুধু এফ-কমার্স মানে যারা শুধু ফেসবুকে দোকান সাজাবেন। তবে প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন আপনাকে কাজে উৎসাহী করবে, চাপ দিবে, এগিয়ে যেতে তাগিদ অনুভব করবেন।
এক মালিকানা ব্যবসায় হলে শুরু করার আনুষ্ঠানিকতা অনেক কম। শুধু ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভা/ সিটি কর্পোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে শুরু করতে পারেন।
অংশীদারী প্রতিষ্ঠান গড়তে হলে পারষ্পরিক সমঝোতার পর আইনজীবির সহায়তা নিতে হবে পরবর্তী করণীয় ঠিক করার জন্য।
৪. ইকমার্স প্ল্যাটফর্ম বেছে নিন
কোন পণ্য বিক্রি করবেন আর কোথায় থেকে সংগ্রহ করবেন তা যদি ঠিক করে ফেলেন তবে আপনি অর্ধেক কাজ করে ফেলেছেন।
পরবর্তী ধাপ হল এক বা একাধিক প্লাটফর্ম বাছাই করা যেখানে আপনি অনলাইনে দোকান সাজাবেন, যেখানে আপনি আপনার পণ্য প্রদর্শন করবেন। আপনার সাইট আপনার ব্র্যান্ডের চেহারা। যেখানে আপনি ক্রেতার সথে মিলবেন, প্রচার করবেন, বিক্রি করবেন, মূল্য গ্রহণ করবেন।
ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করতে পারি:
১. সোশ্যাল মিডিয়া
২. ওয়েবসাইট
ওয়েবসাইটে আপনার অনলাইন দোকানটি বানানোর জন্য নির্দিষ্ট ইকমার্স একটি প্ল্যাটফর্ম বাছাই করতে হবে। ওয়েবসাইট আছে দুই রকম, ১. আপনি নিজেই একটি ফুল ফিচার্ড ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন অথবা ২. প্রতিষ্ঠিত কোনো মার্চেন্টপ্লেসে যোগ দিতে পারেন। অথবা দুটোই করতে পারেন। বড় প্রতিষ্ঠান হলে নিজের ওয়েবসাইট থাকা আবশ্যক। ব্যক্তিউদ্যোক্তারা ফেসবুক শপ খুলে শুরু করতে পারেন। আর যারা ওয়েবসাইট ভিত্তিক দোকান খুলবেন তাদের সোশ্যাল মিডিয়াতে থাকতে হবে, অর্থৎ তাদের দুই ধরণের প্ল্যাটফর্মেই থাকতে হচ্ছে।
ইকমার্স প্ল্যাটফর্ম বাছাই করার বিবেচ্য বিষয়:
বৈশিষ্ট্য – একেকটি প্ল্যাটফর্মের একেক রকম বৈশিষ্ট্য, যেমন ওকমার্সে খুব কম খরচে ভাল ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়, আবার সেলফহোস্টেড ওয়েবসাইটে বড় বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়, কাস্টমাইজেশনের সুযোগ থাকে অনেক বেশি। আবার মার্চেন্টপ্লেসে যেমন ফ্লিপকার্ট, আমাজন, দারাজ, আজকের ডিল, ওয়ালকার্টে কাস্টমাইজেশনের সুযোগ খুব সামান্যই থাকে।
ব্যবসার জন্য বিশেষায়িত – আপনি কি চুলের যত্নে বিশেষ তেল বা রুপচর্চার বহুমুখী পণ্যের বিশাল সম্ভার এক সাইটে বিক্রি করতে চান? তাহলে আপনার প্ল্যাটফর্মে এর বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী কাজ করার ক্ষমতা আছে কিনা পরীক্ষা করুন।
মোবাইল ভিউ – আপনার ওয়েবসাইট কি মোবাইলের জন্য উপযোগী করা? বর্তমানে বেশিভাগ ব্যবহারকারী মোবাইলেই ইন্টারনেট ব্রাউজ করে থাকেন। তাই ওয়েবসাইটকে হতে হবে মোবাইল থেকে ব্রাউজ করার মত পূর্ণ উপযোগী।
এছাড়া ওয়েব সাইটে থাকতে হবে স্ক্যালিবিলিটি, নিরাপত্তা ও নির্ভরযোগ্যতা, এসইও-বান্ধব।
এখানে বাংলাদেশ ও ভারতের শীর্ষ ইকমার্স মার্চেন্টপ্লেসগুলো দেখে নিন।
৫. ডেলিভারি কীভাবে করবেন সে ব্যবস্থা করুন:
সিদ্ধান্ত নিতে হবে ডেলিভারি আপনি করবেন নাকি কোনো ডেলিভারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে করবেন। ছোট প্রতিষ্ঠান হলে অবশ্যই কোনো ডেলিভারি বা কুরিয়ারের মাধ্যমে করা উচিৎ যারা ঠিকানায় এসে পণ্য উঠিয়ে নেবে ও ডেলিভারি করে দেবে। ডেলিভারির পেছনে ব্যক্তিউদ্যোক্তার সময় ও অর্থ ব্যয় করা উচিৎ হবে না।
আর বড় প্রতিষ্ঠান হলে নিজস্ব ডেলিভারি শাখা খুলে ডেলিভারি করা যায়, এতে ডেলিভারির পুরো প্রক্রিয়া নিজের হাতে থাকবে। পাশাপাশি কোনো ডেলিভারি প্রতিষ্ঠানের কর্পোরেট সেবা নেয়া যেতে পারে। অনেক বড় ই-কমার্স ডেলিভারি প্রতিষ্ঠানের সার্ভিস নিয়ে থাকে কারণ এতে ব্যবস্থাপনা খরচ কমে যায়।
বাংলাদেশে বর্তমানে এমন কুরিয়ার প্রতিষ্ঠান অনেকগুলো আছে যারা আপনার দেয়া ঠিকানায় এসে পন্য নিয়ে যাবে, ক্রেতার কাছে ডেলিভারি করবে, পন্যের মূল্য গ্রহণ করবে, এবং টাকা আপনার কাছে পাঠিয়ে দেবে। ড্যাশবোর্ডে লগিন করে বা মোবাইল এ্যাপে বসে পার্সেল ট্র্যাক করতে পারবেন, জানতে পারবেন পার্সেলটি এখন কোন পর্যায়ে আছে, ডেলিভারি হয়েছে কিনা বা কবে হবে ইত্যাদি। তাদের কর্পোরেট প্যাকেজ থাকে।
৬. পণ্যমূল্য গ্রহণ ব্যবস্থা যুক্ত করুন
বাংলাদেশে এখনও ক্রেতারা মূল্য অগ্রিম প্রদান করতে আগ্রহী নয়। এজন্য এখানে ক্যাশ অন ডেলিভারি পদ্ধতি জনপ্রিয়। তারপরও সাইটে অনলাইনে মূল্য গ্রহণের ব্যবস্থা থাকতে হবে। এজন্য পেমেন্ট গেটওয়ের সেবা নিতে হবে যারা আপনার ওয়েবসাইটে পেমেন্ট সিস্টেম ইন্সটল করে দেবে। পেমেন্ট গ্রহণের অর্থাৎ আপনার ব্যাংকে টাকা চলে যাবে সেই ব্যবস্থা করবে। এটি নিরাপদ, টাকা স্থানান্তর নিশ্চিত করে৷ আপনি গেটওয়েগুলোর সাথে যোগাযোগ করে বুঝতে পারবেন কোন সেবা আপানার উপযু্ক্ত।
পণ্যের বিক্রয় মূল্য গ্রহণের উপায়গুলি:
- ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড
- ডিজিটাল ওয়ালেট (যেমন বিকাশ/নগদ ইত্যাদি)
- ব্যাংক স্থানান্তর
- এখন কিনুন, পরে দাম দিন
- এনএফটি
- ক্যাশ অন ডেলিভারি
ছোট অনলাইন শপের পক্ষে অটোমেটেড পদ্ধতিতে মূল্য গ্রহণ সম্ভব হবে না, কারণ পুরো সিস্টেম মেইন্টেইন করা কিছুটা জটিল ও এতে বেশ ভাল পরিমাণে ব্যয় হয়। বড় প্রতিষ্ঠানের বিশাল পরিমাণের বিক্রির বিপরীতে তা অবশ্য অল্পই। তাই ছোট প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্যাশ অন ডেলিভারিতে বিক্রি করা ভাল। অনেকে অবশ্য মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল এ্যাপ যেমন বিকাশ, নগদ, রকেটে মূল্য নিয়ে থাকে, এটা ভাল অপশন।
৭. অনলাইন ব্যবসায়ের নাম রাখুন ও ডোমেইন কিনুন
অবশেষে ব্র্যান্ডিং করার সময় এল। আপনার ব্যবসার জন্য একটি মনে রাখার মত, সহজ, মানানসই নাম বাছাই করুন।
আপনার পণ্য, সেবা, বা অনন্য বৈশিষ্ট বিবেচনা করে মাথা খাটিয়ে নাম ঠিক করুন। অথবা, অনলাইনে বেশ কিছু নাম জেনারেটর ওয়েবসাইট পাবেন। এই লিংকে ই-কমার্সের নাম রাখার পদ্ধতি বিস্তারিত সহজে বলা হয়েছে।
অনলাইন শপের নাম কেমন হবে তা এই পোস্টে আলোচনা করেছি দেখে নিন।
সর্বোপরি, নিশ্চিত করুন যে আপনার ব্যবসার নাম ব্যতিক্রম ও ইতিমধ্যেই অন্যকোনো প্রতিষ্ঠান এই নামের নেই। আপনি বিভিন্ন উপায়ে এটি করতে পারেন:
- আপনার প্রতিযোগীদের নামের দিকে তাকান
- গুগল ও শোস্যাল মিডিয়াতে সার্চ দিন।
- আপনার স্থানীয় ব্যবসা নিবন্ধন সংস্থায় খোঁজ নিন।
আপনার ব্র্যান্ডের নাম ঠিক করার পরে সেই নামে ডোমেইন কিনে ফেলুন৷ এর আগেই আপনি ডোমেইনের প্রপ্যতা বিবেচনা করেই নাম ঠিক করেছেন। ডোমেইনের জন্য বছরে ১৩ থেকে ১৫ ডলার খরচ হবে। নেমচিপে সার্চ করে দেখুন ডোমেইনটি খালি আছে কিনা ও খরচ কেমন হবে। নতুন ক্রেতাদের জন্য নেমচিপে অফার থাকে। ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোরও উচিৎ ডোমেইন কিনে রাখা, কারণ পরে নাও পাওয়া যেতে পারে।
Find a domain starting at $0.99
powered by Namecheap
৮. ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি ও ডিজাইন করুন
এটা আপনার মেধা ও সৃজনশীলতা প্রয়োগের যায়গা যেখানে আপনার ব্র্যান্ড আলো ছড়াবে। তবে ক্রেতা শুধু ওয়েবসাইটের সৌন্দর্য্য দেখে ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নেয় না, কত সহজে সে কাঙ্খিত পণ্য খুঁজে পেল, এবং তথ্যে চমৎকার উপস্থাপনা তাকে কনভিন্সড করে ফেলল।
ভাল ওয়েবসাইট তৈরি করার কৌশল:
সিএমএস ব্যবহার করুন: চাকা বারবার আবিষ্কার না করে প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি প্রয়োগ করা ভাল। সুপ্রচলিত সিএমএসগুলো ব্যবহার করে ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন, যেমন ওকমার্স-ওয়ার্ডপ্রেস, ম্যাজেন্টো, ওএসকমার্স। ওয়ার্ডপ্রেস বর্তমানে সারা বিশ্বে যে কোনো ধরণের ওয়েবসাইট তৈরি করতে শীর্ষস্থানীয় পছন্দ। পাশাপাশি এটি তৈরি করার খরচ তুলনামূলক কম, ব্যবহার, এসইও, নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ সহজ।
ছোট উদ্যোক্তাদের জন্য কাজটি ওয়ার্ডপ্রেস বেশ সহজ করে দিয়েছে, কম খরচে থিম ফরেস্ট থেকে থিম কিনে ফিচারবহুল ভাল ই-কমার্স ওয়েবসাইট করা যায় ওয়ার্ডপ্রেস ও ওকমার্স প্লাগিনের মাধ্যমে।
অভিজ্ঞ ডেভেলপার নিয়োগ করুন ও অন্য সাইট থেকে আইডিয়া নিন: অভিজ্ঞ ডেভেলপারের পরামর্শ নিন, তাকে কাজে নিয়োগ করুন যিনি ই-কমার্স সাইটের ব্যাপারে ভাল বুঝেন। শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স সাইট ঘেটে সেগুলোর ব্যবহারউপযোগীতা পরীক্ষা করে নিজের সাইট তৈরি করুন।
তিন-ক্লিকের নিয়ম অনুসরণ করুন: ক্রেতা যেন পন্য খুঁজে পেতে সমস্যায় না পড়ে বা তাকে ওয়েবসাইট ঘাটতে না হয় পণ্য দেখতে। এজন্য নিয়ম হল যেন মাত্র তিন ক্লিকে সে পণ্য দেখতে পারে। হোমপেজেই শপ সেকশনে ঢুকার আকর্ষণীয় সরাসরি লিংক থাকতে হবে।
ওয়েবসাইটে শিপিং তথ্য, ফেরত দেবার নীতি এবং যোগাযোগের তথ্যের মতো মূল লিঙ্কগুলি তৈরি করতে ভুলবেন না যা আপনার ফুটারে প্রদর্শণ করবে।
আপনি কি বিক্রি করেন সেটা স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করুন: আপনার ওয়েবসাইটে ঢুকেই যেন যে কেউ বুঝতে পারে এটি কোন পণ্যের বিক্রয়স্থান।
স্পষ্ট কল-টু-অ্যাকশন (CTAs) দিন: ক্রয় প্রক্রিয়ার প্রতিটি পর্যায়ে, আপনার গ্রাহক যেন সহজে বুঝতে পারে এর পর কী করতে হবে। স্টেপ বাই স্টেপ দৃষ্টিআকর্ষণীয় বাটন বসান। যেমন, “কার্টে যোগ করুন” বা “এর মতো আরও পণ্য খুঁজুন করুন” বা অর্ডার করুন।
পণ্যের বিবরণে এড়িয়ে যাবেন না: এটি ই-কমার্স সাইট নির্মাতাদের বড় ভুল। পণ্যের বিস্তারিত, খুটিনাটি বিবরণ দিন। কীভাবে অর্ডার করবে, কীভাবে ডেলিভারি হবে, ডেলিভারি খরচ কত, ফেরত দেবার নীতি ও পদ্ধতি বিস্তারি। এবং এসব যেন পণ্যের পেজেই দেখতে পায়।
ছবি দিয়ে বুঝিয়ে দিন: আপনাকে বলার প্রয়োজন নেই যে পণ্যের ছবি বা ভিডিও অনলাইনে বিক্রি করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গ্রাহকরা প্রায়শই প্রথমে ছবিগুলি দেখেন এবং তার ভিত্তিতে ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন৷ পণ্যের চেহারা, আকার, রং, বৈশিষ্ট্য সঠিকভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেশাদার ফটোগ্রাফার নিয়োগ করুন বা আউটসোর্স করুন।
৯. শক্তিশালী ব্র্যান্ডিং কৌশল গ্রহণ করুন:
ব্র্যান্ডিং আপনার অনলাইন সাফল্যের একটি বড় অংশ। শত সহস্র ব্যান্ডের মধ্যে থেকে ক্রেতারা ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয়, বা এভাবে বলা যায় ক্রেতা যখন কিনতে চায় তার সামনে সহস্র বিকল্প এসে হাজির হয়। সে কার কাছ থেকে কিনবে? আপনার ব্যবসার নাম, লোগো, রঙ এবং ভয়েস টোন থেকে সবকিছু ব্র্যান্ডিঙের অন্তর্ভুক্ত। ব্র্যান্ড হবে তাই আপনি ব্যবসায়ের যে ব্যক্তিত্ব বা চরিত্র মানুষের সামনে তুলে ধরতে চান।
ব্র্যান্ডের থিম তৈরি করুন, এজন্য এক বা একাধিক ব্র্যান্ড বা থিম কালার বাছাই করতে হবে। যেমন আভিজাত্য বুঝাতে বেগুনি রং বাছাই করা হয়, নারীদের জগৎ বোঝাতে গোলাপি বা ভায়োলেট, একটিভ বোঝাতে লাল রং ইত্যাদী।
এরপরে, লোগো তৈরি করুন, এজন্য ডিজাইনার বা লোগো নির্মাতার সাহায্য নিন। একজন ব্র্যান্ড ডেভেলপার ভাল জানবেন লোগো কেমন হওয়া উচিৎ, এখানে ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দের স্থান দেয়া ঠিক না। রোগী কী ওষুধ খাবেন তা নিজে বাছাই না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার মত।
নাইকির লিজেন্ডারি লোগোটি তো অবশ্যই দেখেছেন, নাইকির মালিক এটি পছন্দ করেন নি, কিন্তু ঠিকই গ্রহণ করেছিলেন কারণ তিনি এর ভবিষ্যৎ অনুভব করতে পেরেছিলেন। আপনি এমন লোগো তৈরি করার চেষ্টা করছেন না যা পণ্যের “স্বাদ”-বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তুলে, এমন লোগো যা মানুষের সাথে কথা বলে।
আরেকটি কম চর্চাকৃত কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ দিক হল প্রতিষ্ঠানের কথা বলার ভঙ্গি, আসলে ইংরেজিতে বললে ভাল বোঝা যাবে, “টোন অব ভয়েস”।
পণ্যের বিবরণ, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট এবং অন্যান্য যোগাযোগের ক্ষেত্রে লেখার সময় এটি বিবেচনা করা উচিত। আপনার লেখার ভঙ্গি কেমন হবে, রসবোধের প্রকাশক, গুরুগম্ভীর? এটা ঠিক তেমনি আপি ক্রেতাদের সাথে সামনাসামনি কথা বললে যেভাবে বলতেন।
আপনার ব্র্যান্ডের জন্য যখন কন্টেন্ট তৈরি করবেন এই বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ হবে:
- ওয়েবসাইট
- ইমেইল
- ইনভয়েস বা চালান
- পণ্যের প্যাকেজিং
- পরিবহনের উপকরণ
- বিপনন প্রচারনা
গ্রাহকরা যে ব্র্যান্ডের সাথে যুক্ত হবেন তা তৈরি করার ক্ষেত্রে সামঞ্জস্যতাই মূল চাবিকাঠি, সবকিছুর মধ্যে সমন্বয় থাকতে হবে, সম্পর্ক থাকতে হবে।
১০. মার্কেটিং তথা বিপণন প্রচারাভিযান শুরু করুন
আপনার অনলাইন শপ বিক্রি করতে প্রস্তুত। এখন মানুষকে আপনার ব্যবসায় সমন্ধে জানানোর সময়। মার্কেটিং কৌশলের মাধ্যমে ক্রেতাদের আপনার সাইটে নিয়ে আসুন।
অনলাইনে টাকা ব্যয় করে ও টাকা না ব্যয় করে মার্কেটিং করা যায়। টাকা না ব্যয় করে মার্কেটিং করাকে বলে অর্গানিক উপায়। এটি আসলে বিশাল জগৎ, এখানে সংক্ষেপে শুধু অনলাইন মার্কেটিং টুলগুলোর সমন্ধে বলা হল।
প্রচারের অর্গানিক উপায়গুলো:
সামাজিক মিডিয়া – ফেসবুক, লিংকডইন এবং ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক প্ল্যাটফর্মে নিজের জন্য একটি ব্যবসায়িক পেজ তৈরি করুন। এছাড়া ইউটিউব, টুইটার এমনকি টিকটকেও একটিভ হবার দরকার হতে পারে। এসব যায়গায় আপনার ব্যবসার তথ্য আপডেট করুন এবং সম্ভাব্য ক্রেতাদের ইন্টারএকশন করুন৷ ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম থেকে সরাসরি অর্ডার নেয়া, চেকআউট করা যায়।
ইমেল বিপণন – ইমেইলের মাধ্যমে সম্ভভাব্য ক্রেতাদের সরাসরি ব্যবসায় সমন্ধে জানানো যায়। এজন্য নিজস্ব সেটআপ করে মার্কেটিং করতে পারেন অথবা কোনো প্রতিষ্ঠানের ইমেইল মার্কেটিং সেবা নিতে পারেন। নিয়মিত নিউজলেটার, প্রচার, ব্যবসার আপডেট, পণ্যের রিভিউ এবং অন্যান্য ধরনের ই-কমার্স ইমেল পাঠান, তবে খেয়াল রাখবেন সেটি যেন স্প্যামিং পর্যায়ে চলে না যায়, গ্রাহক যেন বিরক্ত না হয়।
SEO – এটি এখনও মার্কেটিঙের রাজা। মানুষ প্রায়শই গুগলে সার্চ করে, আপনাকে সেই সার্চ রেজাল্টে যায়গা করে নিতে হবে। সার্চ রেজাল্টে আগে আসতে তথা উচ্চ র্যাংক পেতে আপনার সাইটকে অপ্টিমাইজ করুন। ইকমার্স এসইও-র সেরা অনুশীলনগুলি অনুসরণ করুন৷ তাছাড়া, গুগল শপিং এবং গুগল বিজনেস প্রোফাইলের (আগে Google My Business নাম ছিল) মত অন্যান্য বিনামূল্যের টুলগুলোর সুবিধা নিন।
আনুগত্য প্রোগ্রাম – ইংরেজিতে একে বলে লয়ালিটি প্রোগ্রাম। সন্তুষ্ট ক্রেতা বার বার কিনে, এরাই ব্যবসায়ে প্রকৃত সম্পদ। ক্রেতাদের রিপিট ক্রেতায় পরিণত করতে ও ধরে রাখতে লায়ালিটি প্রোগ্রাম কার্যারী পদ্ধতি। বিভিন্ন ধরণের অফারের মাধ্যমে এই কাজটি করা যায়। পশ্চিমা দেশগুলোতে এই পদ্ধতি খুব ব্যবহার করা হয়।
পেইড মার্কেটিঙের উপায়গুলো:
শোশ্যাল মিডিয়া যেগুলোতে অর্গানিক মার্কেটিং করা যায়, সেখানেই পেইড মার্কেটিং করা যায়। যেমন বেশি বেশি মানুষের কাছে বিজ্ঞাপন পৌঁছাতে ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার, লিংকডইনে বুস্ট করতে হয়।
গুগল সার্চ রেজাল্টে আপনার সাইটকে দেখাতে এড দিতে পারেন, সার্চের অর্গানিক রেজাল্টের উপরে আপনার সাইটের লিংক দেখাবে। গুগল এডওয়ার্ডসের মাধ্যমে সারা দেশ বা সারা বিশ্বের ওয়েসবসাইটগুলোতে আপনার ব্যবসায়ের বিজ্ঞাপন দেখাতে পারেন। এজন্য আপনাকে এডওয়ার্ডসের বিজ্ঞাপন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের সেবা নিতে হবে বা দক্ষ কাউকে নিয়োগ করতে হবে।
তবে অনেক প্রতিষ্ঠান এখন দাড়িয়েছে যারা অনলাইন শপের জন্য ডিজিটাল মার্কেটিঙের কাজ করে দেয়, তাই নিজে লোক নিয়োগ না করেও ভাল মার্কেটিং করা যাবে। আর যদি নিজে শিখে নিতে পারেন সেটিও ভাল। ইউটিউবে প্রচুর টিউটুরিয়াল পাবেন। আর চাইলে অনলাইনে ট্রেইনিংও করতে পারেন। নিজে শিখে নেবার ভাল দিক হল মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি তৈরি করতে আপনি পুরো স্বাধীন থাকবেন।
মার্কেটিঙের শত শত উপায় আছে, একজন মার্কেটার বা উদ্যোক্তা সেগুলো জানেন। তবে প্রথাগত ব্যবসায়ের আর ই-কমার্সের মার্কেটিঙে কিছু ক্ষেত্রে ভিন্ন আবার কিছু ক্ষেত্র একই। যেমন প্রথাগত ব্যবসায়ের মত টিভিতে, রেডিওতে, বিলবোর্ডে, প্রত্রিকায় ই-কমার্স বিজ্ঞাপন দিতে পারে। কিন্তু তাকে অবশ্যই অনলাইন মার্কেটিং টুলগুলো ব্যবহার করতে হবে।
এবার আপনি আপনার ব্যবসায় প্ল্যান করে ফেলুন, আমি আপনার অনলাইন শপ দেখতে আগ্রহী।